সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রতিবেদন চায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রানালয় ঈশ্বরগঞ্জে শাহজাহান হত্যা মামলায় নেপথ্যের তথ্য নেই এজাহারে

০ টি মন্তব্য 6 ভিউ 13 মিনিট পড়ুন
অ+অ-
রিসেট করুন

প্রতিনিধিঃ

ময়মনসিংহ ব্যুরো
print news | প্রতিবেদন চায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রানালয় ঈশ্বরগঞ্জে শাহজাহান হত্যা মামলায় নেপথ্যের তথ্য নেই এজাহারে | সমবানী

কেন বা কী কারণে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় শাহজাহান কবীর(২০) হত্যাকান্ডের সূত্রপাত, এনিয়ে মামলার এজাহারে কোন তথ্য নেই। ফলে আলোচিত এই হত্যাকান্ডের মামলায় তথ্য গোপন করার কারণে ন্যায় বিচার নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীসহ স্থানীয়রা। এনিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্রপ্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হলেও প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলছে না।

এ ঘটনায় গত ২ ডিসেম্বর এই হত্যা মামলার তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে গৃহীত কার্যক্রম প্রতিবেদনসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগকে অবহিত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো: আবদুল হাই স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে পুলিশের মহাপরিদর্শক বরাবরে এই নির্দেশ দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন আবেদনকারী মোছা: নাহিদা আক্তার।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে নাহিদা আক্তার এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে চলতি বছরের গত ২০ নভেম্বর শাহজাহান হত্যাকান্ডের ঘটনায় ন্যায় বিচার চেয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য নাহিদা আক্তার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে একটি আবেদন দায়ের করেন।

ঘটনার অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার উজান চরনওপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আতিকুল ইসলাম ও বিপুল নামের দুই যুবক গাজীপুর জেলার মাওনা এলাকায় কর্মসূত্রে বসবাস করত। সেখানে আতিকুলে একটি মোবাইল ফোন চুরি হলে বিপুল বাড়ী চলে আসে। এতে আতিকুলের সন্দেহ হয় বিপুল মোবাইলটি চুরি করেছে। এনিয়ে দুইজনের মধ্যে দ্বন্দ সৃষ্টি হলে গত ঈদুল ফিতরের আগের দিন ১০ এপ্রিল রাতে দু’পক্ষের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটে। এতে আতিকুল পক্ষের বাবু’র (২০) মাথা ফেটে যায়। এই মারপিটে নিশাত(২১) নামের এক যুবক জড়িত থাকায় তার বাবা লাল মিয়াকে মারধর করে আতিকুলের লোকজন। এ ঘটনায় উত্তেজনা সৃষ্টি হলে ১১ এপ্রিল ঈদগাহ মাঠ থেকে ফেরার পথে বিপুল পক্ষের শাহজাহান ও তার সঙ্গে থাকা লোকজনের ওপর হামলা করে মারপিট করে আতিকুলের লোকজন। এতে রক্তাক্ত জখম হয়ে নিহত হয় শাহজাহান কবীর (২০)।

থানা পুলিশ সূত্র জানায়, এ ঘটনায় ওইদিনই নিহতের বাবা নূরুল ইসলাম বাদি হয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় ৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৪ থেকে ৫ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।’

অভিযোগ উঠেছে, রহস্যজনক কারণে ওই মামলায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত অনেকেই আসামি হয়নি। এমনকি হত্যাকান্ডের আগের দিনের মারপিটে আতিকুল পক্ষের বাবু রক্তাক্ত আহত হলেও এঘটনায় কোন মামলা দায়ের হয়নি। বরং হত্যাকান্ডের পর থেকে আহত বাবু হাসপাতাল থেকে পরিপূর্ন চিকিৎসা না নিয়েই রহস্যজনক কারণে আত্মগোপনে চলে যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, আহত বাবু স্থানীয় গিয়াস উদ্দিনের নাতি। ঘটনার কিছুদিন আগে গিয়াস উদ্দিন এই হত্যা মামলার ৩ নম্বর স্বাক্ষী এনামুলের বাবা হাবিবুলের কাছে পনের লক্ষ টাকার জমি বিক্রি করেন। ফলে তাদেরকে মামলায় জড়ানো হলে গিয়াস উদ্দিন মামলার বাদী পক্ষকে জমি লিখে দিবে না, এমন হুমকি ও শঙ্কায় তাদের মধ্যে গোপন সমাঝোতা হয়। ফলে ঘটনার প্রকৃত তথ্য গোপন করে নিরীহ বর্গা চাষি ও মামলার বাদী প্রভাবশালীদের ইশারায় থানায় এজাহার দায়ের করে। এ সুযোগে বিগত ৫ আগষ্টের আগের প্রভাবশালীদের ইন্ধনে মামলার ৪ নম্বর স্বাক্ষী লাল মিয়াকে মারধর করার কারণে একই পরিবারের পাঁচজনকে আসামি করা হয়।

স্থানীয়দের দাবি, মামলার এজাহারে তথ্য গোপন করা ঘটনার সঙ্গে জড়িত আতিকুল ও বিপুলসহ সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার প্রকৃত সত্য উঠে আসবে। তবেই এই হত্যাকান্ডের ন্যায় বিচার নিশ্চিত হবে বলেও মনে করছেন তারা।

মামলার এজাহারে তথ্য গোপন করার বিষয়ে বাদি মো: নূরুল ইসলাম বলেন, আতিকুল ও বিপুলের মধ্যে গন্ডগোলের পর আমার নির্দোষ ছেলে নিহত হয়। তবে ঘটনার পর মামলা করার সময় এতকিছু আমার মাথায় কাজ করেনি। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে এসব বিষয় মৌখিক ভাবে বলা হয়েছে। এ সময় নূরুল ইসলাম আহত বাবু’র নানা গিয়াস উদ্দিন মামলার ৩ নম্বর স্বাক্ষী এনামুলের বাবা হাবিবুলের কাছে জমি বিক্রি করেছে স্বীকার করে আরও বলেন, আমার সঙ্গে কারো কোন গন্ডগোল ছিল না কিন্তু আমার ছেলে খুন হয়েছে। বর্তমানে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চার্জসীট দিবে-দিবে বলে টালবাহানা করছে। শুনেছি, আসামি পক্ষ থানা-পুলিশকে অনেক টাকা দিয়েছে, এমন অভিযোগ বাদি নূরুল ইসলামের।

জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ঈশ্বরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কমল সরকার বলেন, মামলার তদন্ত কাজ চলছে, ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট অনেকের সঙ্গেই কথা হয়েছে। তবে হত্যাকান্ডের আগে মারপিটের ঘটনায় আহত বাবু’কে সন্ধান করেও পাওয়া যাচ্ছে না। ইতোমধ্যে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘটনার বিররণ তুলে ধরে মৌখিক আলোচনা হয়েছে, তাদের নির্দেশ পেলেই চার্জসীট দেওয়া হবে।

তবে এই মামলার তদন্ত কাজ শেষ পর্যায়ে বলে জানিয়েছেন ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: ওবায়দুর রহমান। তিনি বলেন, ঘটনার সার্বিক তদন্তের আলোকে প্রতিবেদন তৈরী করা হয়েছে, কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেলে চার্জসীট দেওয়া হবে।

এই বিষয়ে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার (এসপি) মো: আজিজুল ইসলাম বলেন, মামলার তদন্ত কাজ চলমান, খোঁজ নিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

আরও পড়ুন


Discover more from সমবানী

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

একটি মন্তব্য করুন

আর্কাইভ
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১  

এই ক্যাটাগরির আরো খবর

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকিজ ব্যবহার করে। আমরা ধরে নেব আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি চাইলে অপ্ট-আউট করতে পারেন৷ গ্রহণ করুন আরও পড়ুন

Discover more from সমবানী

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading