অনুসন্ধানী সংবাদ প্রমাণিত রাজ্যের আইন অমান্যে ভারতে আটক সিলেটের আওয়ামী লীগ নেতারা জামিনে
প্রতিনিধিঃ
এমদাদুর রহমান চৌধুরী জিয়া, সিলেট
অবশেষে অনুসন্ধানী রিপোর্টিই প্রমাণিত হয়েছে। ধর্ষণ তো দূরের কথা, ভারতে গ্রেফতারকৃত আওয়ামী লীগের চার নেতার বিরুদ্ধে কোন সুনির্দিষ্ট মামলা নেই। ।তাই সিলেট আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের চার নেতাকে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ভারতের মেঘালয় রাজ্যের জুওয়াই মহামান্য ডিস্ট্রিক ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন মঞ্জুর করেছেন।
এর আগে মঙ্গলবার মেঘালয়ের আদালতে তাদের জামিন শুনানির কথা থাকলেও শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি। বুধবার সে দেশের আদালতে তাদের হাজির করে জামিন আবেদন হয়। শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি শফিউল আলম চৌধুরী নাদাল ভারতে আটক সিলেটের আওয়ামী লীগ নেতাদের জামিন এর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের চার নেতাকে যে ঘটনায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে, থানায় রেকর্ড হওয়া মামলার এজাহারে তাদের কারও নাম নেই। তাদের সন্ধিগ্ধ হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
যদিও গত দু’দিন ধরে বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে গ্রেফতার হওয়া নেতাদের বিরুদ্ধে ‘ধর্ষণ, গাড়ি ভাঙচুর, লুট ও অবৈধ অনুপ্রবেশের’ মামলা রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। তবে একমাত্র অনুসন্ধানী সংবাদ প্রমাণিত হয়েছে। ,
মূলত রাজ্য আইন অমান্য করায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অভিযোগের কপি খতিয়ে দেখা যায়, ওয়েস্ট জৈন্তা হিলস ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি ইউ হেনরি মানার গত ১৬ অক্টোবর গাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ এনে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এজাহারে সুনির্দিষ্ট কাউকে আসামির করা হয়নি।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১৬ অক্টোবর বেলা দেড়টার দিকে বাদির দু’টি ট্রাক (এম এল০৪-এ ৫২১২ এবং এমএল০৪ বি ৪১০৯) ভাঙচুর, লুটপাট ও চালককে মারধরের অভিযোগ আনা হয়। এতে অজ্ঞাত বাংলাদেশী নাগরিকও জড়িত থাকার থাকার কথা উল্লেখ করা হয়।
ডাউকি থানা পুলিশ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (বিএনএস) অধীন ১১৮(১) মিথ্যা বিবৃতি/মিথ্যা নথি ব্যবহার), ৩০৯ (৪) ও ৩১০ (২) (ডাকাতি, ছিনতাই), ৩২৪ (৪) (বিপজ্জনক অস্ত্র দ্বারা আঘাত করা) এবং ১৪ ফরেনার্স অ্যাক্ট ধারায় এ মামলাটি (কেস নম্বর ১৯(১০)/২৪) রেকর্ড করে।
এই মামলায় সিলেট আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগের চার নেতাকে গ্রেফতার করার খবর প্রকাশ করে বিভিন্ন গণমাধ্যম। তবে এটিও সঠিক নয়। বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, গ্রেফতারকৃত চার নেতা শিলং পুলিশের সেখানে বসবাস করছিলেন। কিন্তু রাজ্য পুলিশের অনুমতি ছাড়া তারা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের চলে যাওয়ায় সন্দেহ তৈরি হয় পুলিশের মধ্যে। পরে পুলিশ ট্র্যাকিং করে ওই চার নেতাকে কলকাতা থেকে গ্রেফতার করে। আর এই গ্রেফতারের পরেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে অপপ্রচার করা হয় বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউর আলম চৌধুরী নাদেল।
সিলেট আওয়ামী লীগের সেই নেতারা হলেন :-সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যকরি কমিটির সদস্য ইলিয়াছ আহমদ জুয়েল, মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি ও মহানগর যুবলীগের সহ সভাপতি আব্দুল লতিফ রিপনকে শনিবার গভীর রাতে কলকাতা শহরের হাতিয়াড়া এলাকার একটি বাসা থেকে গ্রেফতার করে মেঘালয় পুলিশ।
গ্রেফতারের পর দিন রোববার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বারাসাত কলকাতা জেলা দায়রা আদালতের বিশেষ ক্রিমিনাল আদালতে তাদের হাজির করা হয়। কিন্তু বিচারক উপস্থিত না থাকায় ভারতীয় আইন অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শিলংয়ের স্থানীয় আদালতে অপরাধীদের হাজির করা হবে এমন আশ্বাসে ট্রানজিট রিমান্ড না নিয়েই তাদের মেঘালয়ের জুওয়াই থানার উদ্দেশ্যে নিয়ে যায় পুলিশ।
সোমবার রাত ১১টার দিকে তাদেরকে ডাউকির জুওয়াই থানায় নিয়ে আসা হয়। মঙ্গলবার সেখানকার আদালতে তাদের হাজির করা হয়। এ সময় আইনজীবীর মাধ্যমে তাদের জামিনের আবেদন জানানো হলে আদালতে শুনানি হয়নি। বুধবার আদালতে তাদের জামিন শুনানির দিন ধার্য্য ছিল এবং শুনানি শেষে তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন আদালতের বিচারক।
আরও পড়ুন
- বোরহানউদ্দিনে ইসলামী আন্দোলনের গণ সমাবেশ
- ভোলায় বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যসহ ৫ কারবারি আটক
- বোরহানউদ্দিনে খাবারে নেশা খাওয়াইয়া অচেতন করে ২ লক্ষ টাকা চুরি অসুস্থ্য ৫ জন
Discover more from সমবানী
Subscribe to get the latest posts sent to your email.