মাসুম পারভেজ রুবেল। চিত্রনায়ক ও নির্মাতা। সম্প্রতি রায়হান রাফীর পরিচালনায় ‘ব্ল্যাক মানি’ ওয়েব সিরিজে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। শিগগিরই শুরু করতে যাচ্ছেন এ সিরিজের কাজ। নতুন সিনেমা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হয এ নন্দিত অভিনেতার সঙ্গে
অভিনয়ের ক্ষেত্রে আপনি বেশ বাছবিচার করেন। ‘ব্ল্যাক মানি’ ওয়েব সিরিজের কাজে আগ্রহী হলেন কেন?
চলচ্চিত্রে নির্মাতা রায়হান রাফী মানেই এখন অন্যকিছু। হট কেকের মতো। তার প্রমাণ আমরা গত কয়েক বছরে পেয়েছি। এই একটি কারণেই আমি এই সিরিজে যুক্ত হয়েছি। তিনি যখন আমাকে ফোন করে ‘ব্ল্যাক মানি’র কথা বলেছেন, আমি তাঁর কথা ফেলতে পারিনি।
কোন ভাবনা থেকে ওয়েবের কাজের সঙ্গে যুক্ত হলেন?
ইদানীং অনেকেই ওয়েবমাধ্যমে অভিনয় করছেন। ভালো কাজ হচ্ছে এখানে। আমি যেহেতু সিনেমায় কম কাজ করছি, চিন্তা করলাম ওয়েবের ভুবনে ঢুকে একটু দেখি। ভালো হলে থাকব। না হলে এ মাধ্যমে থাকব না। তা ছাড়া ওয়েব সিরিজটির চিত্রনাট্য যখন হাতে পেয়েছি, পড়ে একটু ব্যতিক্রমী মনে হয়েছে। আমার কাজের তালিকায় চোখ বুলালে দেখতে পাবেন আমি অ্যান্টি হিরো হিসেবে অনেক সিনেমায় অভিনয় করেছি। ‘ব্ল্যাক মানি’ সিরিজে আমার অভিনীত চরিত্রটি একটু অ্যান্টি হিরো টাইপের। সব দিক ভেবেচিন্তেই ওয়েবে কাজ শুরু করতে যাচ্ছি।
ওয়েবের কাজ কতটা চ্যালেঞ্জিং মনে করছেন?
যেহেতু আমি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে একেবারেই নতুন, তাই চ্যালেঞ্জ তো থাকবেই। সিরিজের কাজ শুরু উপলক্ষ্যে এক প্রেস মিটে নির্মাতা রাফী বলছেন, বঙ্গ’র সব কাজে ছাড়িয়ে যাবে ‘ব্ল্যাক মানি’। সেই জায়গা থেকে কাজটি একটু চ্যালেঞ্জিং মনে করি। আর সারাজীবনই চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করেছি। আমাদের সবারই চ্যালেঞ্জ রাখা উচিত। আমি বিশ্বাস করি, সবকিছু দেবার মালিক সৃষ্টিকর্তা। আমরা সবাই মিলে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে কাজটি শেষ করতে চাই। আশা করছি, রাফীর সঙ্গে চমৎকার জার্নি হবে।
সিনেমার কাজ শুরু হচ্ছে কবে?
সিরিজের কাজ শুরু হয়ে গেছে গতকাল। আমি শুটিংয়ে অংশ নেব ১১ অক্টোবর। যতদূর শুনেছি, শরীয়তপুরে এর দৃশ্যধারণ হবে।
সিনেমায় কাজ কমিয়ে দিয়েছেন। এর কারণ কী?
সত্যি বলতে কী, সিনিয়র অভিনয়শিল্পীদের নিয়ে নির্মাতারা চিন্তা করছেন না। আমরা মাদ্রাজ বা বোম্বের দিকে যদি তাকাই, দেখবেন সিনিয়ররা এখনও কাজ করছেন। অভিনেতা রজনীকান্তের বয়স এখন ৭৭। অমিতাভ বচ্চনের বয়সতো আরও বেশি। তারা এখনও দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। আমরা এখন কাজ করলে অনেকে অনেক ধরনের মন্তব্য করেন। নির্মাতাদের বলবে, এই লোকটাকে নিছো ক্যান। আমার কথা না হয় বাদই দিলাম। বড় বড় বরেণ্য অভিনেতা যেমন- আলমগীর, সোহেল রানা, উজ্জ্বল, ইলিয়াস কাঞ্চনের মতো শিল্পীদের সিনেমার কাজে ডাকা হচ্ছে না; এটি দুঃখজনক। এখন যারা কাজ করছেন, তাদের প্রতি আমার অনুরোধ বড়দের ফেলে না দিয়ে তাদের নিয়ে চেষ্টা করা যেতে পারে। মাল্টিকাস্টিং একটা কাজ করেই দেখুন না। ভালো কিছু না হলে করলেন না। আসলে আমরা সেই চেষ্টাটাই করছি না।
চলচ্চিত্রে অনেক সংকট রয়েছে। কোন সংকটকে বড় করে দেখছেন?
হল সংকটই চলচ্চিত্রের জন্য বড় বাধা। অনেক বছর ধরে এটি চলছে। আপনি যত ভালো সিনোমাই তৈরি করেন না কেন, সিনেমা হলে সেটি প্রদর্শন করতে না পারলে চলচ্চিত্রের কোনো পরিবর্তন আসবে না। ধরুন, কয়েক হাজার ভালো ছাত্র আছে। কিন্তু যদি স্কুলই না থাকে তাহলে তারা পড়বে কোথায়? আমার দর্শক আছে, কিন্তু সিনেমা হলে তারা গিয়ে ছবি দেখতে পারছে না। হল বাড়লে প্রযোজকরাও ছবি বানানোর জন্য আগ্রহী হবেন।
‘লড়াকু’ আপনার অভিষেক সিনেমা। এ সিনেমার রিমেক করার কথা বলেছিলেন…
সিনেমাটি নির্মাণের ইচ্ছা ছিল। অনেক পরিকল্পনাও করেছিলাম। একটু পিছিয়েছে। মার্শাল আর্ট জানা নতুন একটি ছেলে দরকার। সে রকম কাউকে পাচ্ছি না। ওই ধরনের ছেলে না পেলে কাজও শুরু করা সম্ভব হবে না। তবে নতুন আরও একটি সিনেমা নিয়ে পরিকল্পনা করছি। নাম এখনও ঠিক করিনি। তাই এখনই বিস্তারিত কিছু বলতে চাই না। নতুন বছরের শুরুতে চলচ্চিত্রটি নির্মাণের ইচ্ছা রয়েছে।
প্রায় চার দশকের বর্ণিল ক্যারিয়ার। চাওয়া-পাওয়ার হিসাব কষেছেন কখনও?
সৃষ্টিকর্তার কাছে আমি অনেক অনেক কৃতজ্ঞ। তিনি আমাকে অনেক কিছু দিয়েছেন। অভিনয় দিয়ে দর্শকের ভালোবাসা পেয়েছি। ইন্ডাস্ট্রি আমাকে সব দিয়েছে। হয়তো আমি এর যোগ্য নই। আমার জার্নিতে আমি সফল ছিলাম। সৃষ্টিকর্তা আমাকে সফল করে দিয়েছেন। এটি আমার দর্শকরাও জানেন। আমার কোনো অতৃপ্তি নেই।
© ২০২২ - ২০২৪ সমবানী কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত